আজ ৩রা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৯শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সত্য সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অপপ্রচার।

ফয়সাল হাসান চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে ভেজাল ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যপণ্য উৎপাদনের সংবাদ প্রকাশ করায় জাতীয় দৈনিক আমার সময় পত্রিকার চট্টগ্রাম প্রতিনিধি সাংবাদিক মোঃ জাকারিয়া হোসেনের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এ ঘটনায় সাংবাদিক মহলসহ সর্বস্তরের মানুষ তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন। গত ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ইং বিকেলে প্রথমে আমার সময় অনলাইন পোর্টাল ও মাল্টিমিডিয়া ফেসবুক পেইজে ভিডিও নিউজ আকারে এবং পরদিন ১৭ সেপ্টেম্বর প্রিন্ট সংস্করণে প্রকাশিত হয়— “চট্টগ্রামের বন্দর থানাধীন মধ্যম হালিশহরের প্যাসিফিক হোম মিট ফুড প্রোডাক্টস নামের বেকারি কারখানায় নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য উৎপাদন” শীর্ষক সংবাদ। কিন্তু এ সংবাদ প্রকাশের পরপরই অসাধু ব্যবসায়ী স্বার্থচক্র সাংবাদিক জাকারিয়া হোসেনকে সামাজিকভাবে হেয় করার ঘৃণ্য অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়। “Abdullah Omar Nashif” নামের একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে তার ভিজিটিং কার্ড ও হোয়াটসঅ্যাপ প্রোফাইল ছবি ব্যবহার করে মনগড়া ও বানোয়াট পোস্ট দিয়ে তাকে চাঁদা দাবির সাথে জড়িত দেখানোর চেষ্টা করা হয়। শুধু তাই নয়, উক্ত ভুয়া পোস্টের স্ক্রিনশট বন্দর-ইপিজেড-পতেঙ্গা সচেতন নাগরিক সমাজ নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে (০১৬৪৭৮৮০১২৫ নম্বর থেকে) শেয়ার করে মৌখিকভাবে মানহানি করার অপচেষ্টা চালানো হয়। গ্রুপের সচেতন নাগরিকেরা যখন পোস্টের সত্যতা যাচাই করতে চান, তখন অসাধু মহল কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে না পেরে আরও মনগড়া গল্প বানিয়ে সাংবাদিকের সম্মানহানি করার হীন প্রচেষ্টায় লিপ্ত হয়। যা একজন জাতীয় দৈনিকের দায়িত্বশীল সাংবাদিকের জন্য শুধু অপমানজনকই নয়, বরং গণতন্ত্র, মুক্ত গণমাধ্যম ও জনস্বার্থের জন্য ভয়ংকর হুমকি। সাংবাদিকের ক্ষোভ ও প্রতিবাদ – এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে সাংবাদিক জাকারিয়া হোসেন বলেন—আমি সাংবাদিকতার দায়িত্ববোধ থেকে তথ্য-চিত্র সংগ্রহ করে ভেজাল ও নোংরা পরিবেশে খাদ্য উৎপাদনের সংবাদ প্রকাশ করেছি। অথচ অসাধু ব্যবসায়ী চক্র তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ড আড়াল করার জন্য আমার নামে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন পোস্ট ছড়িয়ে মব ভায়োলেন্স সৃষ্টির মাধ্যমে আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করার চেষ্টা করছে। এটি সাংবাদিকতা ও মুক্ত গণমাধ্যমের ওপর নগ্ন আঘাত।”তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় তিনি ইতোমধ্যে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং – ৯৩৫) করেছেন। প্রয়োজনে আদালতের মাধ্যমে বিটিসিএল ও সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহযোগিতা নিয়ে মিথ্যাচারকারীদের আইনের আওতায় আনবেন।
সাংবাদিক জাকারিয়া হোসেন দৃঢ় কণ্ঠে বলেন—আমার বিরুদ্ধে যত অপপ্রচারই চালানো হোক না কেন, আমি ভেজাল ও নোংরা খাদ্যপণ্যের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত হব না। ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিএসটিআই-এর সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ না হওয়া পর্যন্ত আমার প্রতিবাদী কলম থামবে না।” সাংবাদিক মহল ও নাগরিক সমাজের প্রতিক্রিয়া – সাংবাদিক মহলসহ সাধারণ মানুষ মনে করছেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা নোংরা পরিবেশে ভেজাল খাদ্য উৎপাদনের মতো অপরাধ ঢাকতে গিয়ে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে মূলত পুরো গণমাধ্যমকেই ভয় দেখানোর অপচেষ্টা করছে। এটি শুধু একজন সাংবাদিকের মানহানিই নয়, বরং জনস্বার্থ, গণতন্ত্র ও মুক্ত সাংবাদিকতার প্রতি নগ্ন চ্যালেঞ্জ। তারা প্রশ্ন রাখেন— “সাংবাদিক যদি জনগণের স্বাস্থ্য ও জীবনের জন্য ভয়ংকর এমন একটি সত্য তুলে ধরতে গিয়ে এভাবে মানহানির শিকার হন, তবে সাধারণ মানুষ তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কিভাবে সাহসী ভূমিকা রাখবে?” সচেতন মহল বলেন, এই ধরণের নিন্দনীয় কর্মকাণ্ড দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ছাড়া থামানো যাবে না। তারা দাবি জানান, অবিলম্বে মিথ্যাচারকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হোক। অসাধু ব্যবসায়ী চক্রের এই ধরণের অপচেষ্টা শুধু সাংবাদিক নয়, পুরো সমাজকেই আতঙ্কিত করে। ভেজাল খাদ্য উৎপাদনের মতো গুরুতর অপরাধ ঢাকতে গিয়ে সাংবাদিকের সম্মানহানি করা একদিকে যেমন গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হুমকি, অন্যদিকে সাধারণ মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিকে আরও বড় করে তোলে। আজ সময় এসেছে— যারা সত্য তুলে ধরে, তাদের মুখ বন্ধ করার অপচেষ্টা রুখে দাঁড়াবার। সাংবাদিককে কলমের শক্তি দিয়ে মানহানি করা যায় না। সত্যকে যতই আড়াল করার চেষ্টা করা হোক, তা শেষ পর্যন্ত উন্মোচিত হবেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর